লেডি কুইন (চ্যাপ্টার টু)
পর্ব ৮
লেখা:Meherab Kabbo
#bymeherab
আয়ান ভার্সিটির গেইট দিয়ে ঢুকতেই তাসনিম আয়ানের পথ আটকে দিলো। আয়ান তাসনিমকে দেখে অবাক হয়ে গেলো। তাসনিম আয়ানকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখছে। আয়ান পাশ কাটিয়ে যাওয়ার জন্য ধরলো তাসনিম আয়ানকে যেতে দিলো না। তাসনিম বললো
– এত ব্যস্ত কিসের। তুই জানিস তুই কার সামনে দাঁড়িয়ে।
আয়ান কিছু বললো না। চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। তাসনিম আবার বললো
– তোকে অসংখ্য ধন্যবাদ তুই আমাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছিলি। তোর এই ঋণ কখনো শোধ করতে পারবো না।
আয়ান চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে কিছু বললো না। তাসনিম বললো
– কোনো বিপদ পড়লে আমাকে জানাবি। কখনো কোনো কাজে প্রয়োজন হলে আমাকে স্বরণ করিস।
আয়ান শুধু মাথাটা নাড়ালো। কোনো কথা বললো না। এর ভেতর তিথি এসে হাজির। আয়ানকে দেখে
– আরে তুমি। এখানে দাড়িয়ে কি করছো। ক্লাসে যাবে না। চলো।
আয়ান তিথির সাথে ক্লাসের দিকে চলে গেলো। তাসনিম দাঁড়িয়ে আছে। তাসনিমের বন্ধুরা এসে
– কি রে ছেলেটা কি বোবা নাকি।
– আমার ও তো তাই মনে হয়।
– তোর সাথে কি কথা বলতে কি ভয় পেয়েছে?
– ছেলেটার পোশাক দেখেছিস৷ সাধারণ কেমন একটা।
– গ্রামের গাইয়া হবে।
-চুপ। ও যেখানের হোক না কেন কাউকে ছোট করে দেখতে নেই৷
তাসনিমের এমন কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে গেলো।
* এদিকে ডালিয়া চৌধুরীর ফোন বাজছে। ডালিয়া চৌধুরী ফোনটা ধরার সাথে সাথে ফোনের অপর পাশ দিয়ে
– কালকে বড় ধরণের চমক আছে একটা।
-কি চমক?
– কালকেই দেখতে পারবে।
ফোনটা কেটে গেলো। ডালিয়া চৌধুরী ইমনকে ফোন করলো। ইমন ফোনটা ধরতে ডালিয়া চৌধুরী বললো
– উপর থেকে ফোন আসছিলো। শহরের অলি গলিতে আমার প্রতিটা লোককে এ্যালার্ট করে দাও। সে আসছে।
ইমন ঘাবড়ে যেয়ে
– হোয়াইট?
– আমি চায় না সে এসে কোনোরুপ খুদ না ধরতে পারে৷
– ঠিক আছে ম্যাডাম।
ফোনটা কেটে গেলো। ।
ইমন ফোন করে সবাইকে বলে দিলো। পাতি মাস্তান থেকে শুরু করে বড় ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দিলো। এই কথাটা শুনে সবার গলা জেনো শুকিয়ে গেলো।
ডালিয়া চৌধুরী বাসা থেকে বের হয়ে আশরাফ চৌধুরী আর মর্জিনা খানের সামনে দাঁড়িয়ে হেসে উঠলো তারপর বললো
– আসতাছে সে। তোদের এই করুণ অবস্থা দেখার জন্য যে এই গেইমের ছকটা একেছিলো আর তোরা সেই গেইমের ভিলেন তোরা ছিলি।
আশরাফ চৌধুরী বললো
– আসবে ঠিকি একদিন আসবে।
মর্জিনা খান বললো
– সময় খুব নিকটে। এর শেষ হবেই।
ডালিয়া চৌধুরী জোড়ে হেসে উঠলো।
* হৃদ সব কিছুর আয়োজন করছে। খুব সুন্দর করে রুমটা সাজানো হলো। কিছুক্ষণ পর একটা গাড়ি হোটেলের সামনে এসে দাঁড়ালো। গাড়ি থেকে জেসি নামলো। হোটেলের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায়। একটা মেয়ে এসে জেসির চোখ বেঁধে দেয়। জেসি ঘাবড়ে যায়। জেসিকে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে। অন্ধকার রুমে এসে জেসির চোখ খুলে দেয়। জেসি অন্ধকার ঘর দেখে আতংকে উঠে। ভয় পেয়ে যায়। হঠাৎ করে লাইটের আলো জ্বলে উঠে। জেসি পুরো অবাক হয়ে যায়। নিজের চোখকে তো বিশ্বাস করতে পারছে না। হৃদ একটা আংটি হাটু মুড়ে বসে জেসিকে প্রপোজ করে। জেসি এমন মূহুর্তে কি করবে বুঝতে পারছে না। খুশিতে হাতটা বাড়িয়ে দিলো হৃদের দিকে। হৃদ জেসিকে আংটিটা পড়িয়ে দেয়। হাতটা ধরে হাতের উপর আলতো করে চুমু খায়। জেসি হৃদকে জরিয়ে ধরে। আজ জেনো সব সুখ এসে পড়ছে ওদের উপর ।
*★
থানায় বসে আছে আকবর। রয় এসে আকবরকে বললো
– স্যার স্যার মাফিয়া বজ্জাত মহিলাটা কাল আসবে দেশে।
– এটা আবার কে?
– লেডি কুইন।
আকবর বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে
– হোয়াইট? তুমি ঠিক বলছো।
– হ্যা স্যার।
– তাহলে ফোর্স সবাইকে রেডি থাকতে বলো। কালকেই ধরবো লেডি কুইনকে।
রয় অবাক হয়ে
– লেডি কুইনকে ধরবেন মানে।
– লেডি কুইনের নামে অনেক মামলা রয়েছে তাই ওকে ধরতে সুবিধা হবে।
– স্যার আপনার কি বাঁচার কি কোনো ইচ্ছা নেই?
– কেন?
– আপনি জানেন ঐ মহিলার কথায় সবাই উঠবস করে।
– আমি তো শুনবো না লেডি কুইনের কথা। সোজা ওকে লকাবে ঢুকাবো।
– স্যার আপনি মরবেন ওদের হাতে।
– কে কখন মরে তা শুধু অপেক্ষা থাকার বিষয়।
আকবর মুচকি হেসে দিলো। রয় বললো
– স্যার আমাদের উপরের আদেশ মেনে চলতে হবে।
– হুম।
ডালিয়া চৌধুরী বাসা থেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো। লেডি কুইন নামের ক্লাবে সবাইকে একত্রে হওয়ার জন্য বলছে। বৈঠকে বসবে সবাই।
ক্লাস শেষে আয়ান ক্যাম্পাস দিয়ে যাচ্ছিলো। তাসনিম এসে সামনে দাঁড়িয়ে
– এই তোমার নামটা তো বলোনি। কি নাম তোমার?
– জ্বী আয়ান।
– আমি তাসনিম। তুমি কই থাকো।
– সাগর চাচার বাড়িতে।
– ওহ আচ্ছা। আমরা বন্ধু হতে পারি।
– আমার মতো ছোটলোক ছেলের সাথে বন্ধুত্ব করবেন।
– বন্ধুত্বে ছোট লোক বড়লোক দেখে হয় না। বুঝছো।
– কাল এসে বলি।
– ঠিক আছে।
আয়ান চলে গেলো। গেইট দিয়ে বের হতেই দেখলো তিথি কয়েকটা লোকের সাথে কথা বলছে। আয়ানকে দেখে এক এক জন এক এক দিকে চলে গেলো। আয়ান বিষয়টা খেয়াল করলো কিন্তু কিছু বললো না। আয়ান বাসায় চলে গেলো।
হৃদ জেসিকে নিয়ে বাইকে নিয়ে বের হলো। আজ তারা সারাদিন ঘুরবে। অনেক খুশি দুজনে আজ।
সন্ধ্যার পর ডালিয়া চৌধুরীর গাড়ি ক্লাবের সামনে এসে দাঁড়ালো। ইমন গেইটের কাছেই ছিলো। যেয়ে গাড়ির দরজা খুললো। ডালিয়া চৌধুরী বের হয়ে চারপাশ দেখলো৷ ইমনকে বললো
– সবাই এসেছে।
– হ্যা ম্যাডাম।
– হৃদ কি আসছে?
– না।
ডালিয়া চৌধুরী হৃদকে ফোন দিলো। হৃদ ফোন ধরতেই
– কই তুমি হৃদ?
– মম এই তো এসে গেছি।
– ব্যস্ত এসো।
ফোনটা কেটে গেলো। ডালিয়া চৌধুরী ক্লাবের ভেতর ঢুকে পড়লো। মিটিং করার আলাদা একটা রুম আছে সেখানে ঢুকতেই সবাই দাঁড়িয়ে পড়লো। হৃদ কিছুক্ষণ পর জেসিকে নিয়ে ক্লাবের ভেতর ঢুকলো। ডালিয়া চৌধুরী হৃদের দিকে তাকিয়ে পড়লো রাগি চেহারা নিয়ে।
পরের দিন সকালে ভার্সিটিতে ব্লাক কালারের কার এসে থামলো৷ সবাই অবাক হয়ে গেলো। গাড়ি থেকে শুট প্যান্ট পড়া একটা লোক নামতেই হৃদ উঠে দাঁড়ালো। সবাই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে পড়লো………….
(Waiting for next part)
লেডি কুইন চ্যাপ্টার টু পর্ব ৮ |